1. admin@news.bholarnews.com : admin :
শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন

চরফ্যাসনে একটি অবৈধ ইটভাটায় নষ্ট ৬ হাজার একর ফসলি জমি, কৃষক পরিবারের কান্না

  • প্রকাশ কাল রবিবার, ১৮ মে, ২০২৫

চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ

ভোলার-চরফ্যাসন উপজেলার নীল কমল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে এক আওয়ামীলীগ নেতার ঢাকা ব্রিক্স নামের একটি অবৈধ ইটভাটায় ৬ হাজার একর ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ভাটার কারনে শত শত কৃষক তাদের কষ্টের ফসল না পেয়ে নিরব কান্নায় দিনযাপন করছেন। ওই ইট ভাটা কিছুতেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা। সারা দেশের ন্যায় চরফ্যাসনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অবৈধ ইটভাটা বন্ধ, উচ্ছেদ, ধ্বংস ও জরিমানা করার পরেও আবার প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলছে এসব অবৈধ ইটভাটাগুলো। অন্যদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ রয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে মুখে মুখে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, চরফ্যাসনের নীল কমল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতার মেসার্স ঢাকা ব্রীক্স হঠাৎ নাম বদলিয়ে- প্রোপ্রাইটার মোঃ খোরশেদ আলম নামের ইট ভাটা চালু করেন। কাগজপত্রে তাদের কোন প্রকার অনুমতি না থাকলেও ডিসেন্বর মাসে তিন ফসলী ৬ হাজার একর কৃষি জমির এলাকায়,সরকারী রাস্তা দখল করে নিয়ে নিজস্ব-২ একর জমির মধ্যে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু করে। আস্তে আস্তে কৃষকের ফসলি জমি দখল করে ইট ভাটা প্রশস্ত করতে থাকে। কোন কৃষক ভয়ে তাদেরকে প্রতিবাদ করতে পারেননা। তারা সরকারী খাল, নদী, ব্যাক্তি মালিকানা পুকুর ও কৃষকের ফসলি জমি থেকে রাতের আধারে চুরি করে ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ইট তৈরী করে বীর দর্পে বিক্রি করে আসছেন। ঢাকা ব্রিক্স আশ-পাশ থেকে ৫০ থেকে ৬০ একর কৃষি জমি দখল করে ইট কাটছেন। ভাটার ধোয়া এবং কাঠ পোড়ানো ছাইয়ে প্রায় ৬ হাজার একর জমির বিভিন্ন প্রকার ফসল নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন কৃষকেরা। স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তোতা মিয়াকে ম্যানেজ করে চলছে এসব ইটভাটা। অন্য দিকে চরফ্যাসনের প্রায় ভাটার সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক তোতা মিয়ার মালিকানা রয়েছে এবং প্রতি ভাটা থেকে মাটা অংকের ঘুষ গ্রন করেন বলে ভাটার শ্রমিকেরা জানান।

পরিবেশ অধিদফতর সহকারী পরিচালক তোতা মিয়া জানান, ফেব্রুয়ারী মাসে অভিযান চালিয়ে অবৈধ ইটভাটাকে জরিমানা করা হয় এবং কয়েকটি ভাটার চিমনি ও কিলন আংশিক ভেঙে দেয়া হয়। আমাদের জনবল কম তাই সব সময় অভিযান চালানো যায়না। স্থানীয় প্রশাসন আমাদের সব সময় সহযোগীতা করেনা। ঢাকা ব্রিক্সের বিষয়ে তোতা মিয়া বলেন, তাদের কোন অনুমতি নাই, তাই তাদের ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে, কিন্তু বন্ধ করা হয়নি। অবৈধ ভাটাকে জরিমানা করে ছেড়ে দেয়ার আইনগত কোন ভিত্তি আছে কিনা, কোন ম্যাজিষ্ট্রেট জরিমানা করেছেন এবং জড়িমানার টাকা কোথায় জানতে চাইলে তিনি তার কোন উত্তর না দিয়ে দিক-বেদিক ছুটা ছুটি করেন। ঘুষ গ্রহন ও মালিকানার বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক তোতা মিয়া অস্বিকার করেন। তিনি তার চাকুরী জীবন প্রায় সময় ভোলাতেই কাটিয়েছেন। ম্যানেজার রিপন জানান, ভাটার মালিক দেশে নাই, আমি চাকরি করি এর বাহিরে কিছুই জানিনা।

এবিষয়ে জানতে চরফ্যাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (৩৫তম বিসিএস) রাসনা শারমিন মিথির মুঠো ফোনে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক তরিকুল ইসলাম কায়েদ বলেন, এ বছর আমাদের সমিতির কোন কার্যক্রম নাই। যে দিন থেকে ভাটার মালিকেরা সঠিক ভাবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ভাটা চালু করবে সেই দিন থেকে সমিতির কার্যক্রম শুরু হবে। অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু পরে আবারও সেগুলো চালু করে থাকলে সেটা আমাদের জানার কথা নয়। এ ক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। প্রশাসন এককভাবে সব করতে পারে না। স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলব ফের অভিযান চালিয়ে অবৈধ ইটভাটা বন্ধসহ অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।

 

শেয়ার করুন...

এধরণে আরও নিউজ