1. admin@news.bholarnews.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন

বোরো ধানের বাম্পার ফলন, বোরহানউদ্দিনে কৃষকের মুখে হাঁসি

  • প্রকাশ কাল বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

বোরহানউদ্দিন প্রতিনিধিঃ

বোরহানউদ্দিন উপজেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম এবং ধানে তেমন কোনো রোগবালাই না লাগায় ফলন অত্যন্ত ভালো হচ্ছে। ইতোমধ্যে কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে পুরোপুরি শুরু হবে ধান কাটার কাজ। কৃষকের ঘরে ঘরে ফিরবে নবান্ন উৎসবের আমেজ।

এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, সবুজ ধান পেকে সোনালি রঙ ধারণ করেছে। বাতাসে দোল খাচ্ছে সোনালি ধানের শীষ। এ দৃশ্য দেখে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে নবান্নের হাঁসি। এক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হবে ধান কাটা। এরপর ২-৩ দিন রোদে শুকিয়ে ধানের আঁটি বেঁধে বাড়িতে আনা হবে। বোরহানউদ্দিনের কৃষকেরা পরিবারের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবেও বছরে দুবার ধান চাষ করে থাকেন। ধানের পাশাপাশি এর বিচালি উৎকৃষ্ট মানের গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রাপ্ত বিচালির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা।

উপজেলার সাচড়া ইউনিয়ন চর গাজীপুর গ্রামের ধান চাষি ইব্রাহিম বলেন, আমি এবার দুই বিঘা জমিতে ভালো জাতের ধান চাষ করেছি। ধান খুব ভালো হয়েছে। আগামী ২-৩ দিন পর ধান কাটা শুরু করবো। প্রতি বিঘায় ৩০ মণ করে ধান পাবো বলে আশা করছি। নিজের খোরাকের জন্য কিছু রেখে বাকি বিক্রি করবো। বিচালিও গরুর সারা বছরের খোরাক হয়ে যাবে।

উপজেলার দেউলা গ্রামের কৃষক আকবর জানান, আমি দেড় বিঘা জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করেছি। ফলন এবার খুব ভালো হবে বলে আশা করছি। মাঠের ধান দেখে খুব আশাবাদী। তবে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় আছি। ধান ঘরে না উঠা পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছি না। ধান বিক্রি করে মহাজনের হালখাতা ও বর্গা জমির টাকা শোধ করবো।

একই গ্রামের কৃষক মন্টু মিয়া বলেন, ধান চাষ এখন অনেক ব্যয়বহুল। তবে এবার ফলন দেখে মনে হচ্ছে ধান লাগানো, সেচ, সার-কীটনাশক ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে লাভ থাকবে।

গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আবুল হোসেন বলেন, প্রতিবিঘা জমিতে ধান লাগানো, সেচ, সার-কীটনাশক, শ্রমিক ও জমি লিজমানি বাবদ খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ৩০ মন ধান হলে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারবো। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ১৫ হাজার টাকা লাভ থাকবে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ গোবিন্দ মন্ডল জানান, চলতি মৌসূমে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ১০ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। সেখানে ১০ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হয়েছে। এর মধ্যে বোরো হাইব্রিড ৩৪০ হেক্টর ও উপসি ৯ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। উপজেলার ২২ শত কৃষকদের মাঝে ২কেজি করে হাইব্রিড বিজ বিতরণ করা হয়। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব তেমন ছিল না এবং ধানে রোগবালাইও তুলনামূলকভাবে কম ছিল। ঝড় ও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাসের বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা কৃষকদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেলে দ্রুত ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন...

এধরণে আরও নিউজ