চরফ্যাশন প্রতিনিধিঃ
ভোলার চরফ্যাশনে ১২ বছরের ভোগদখলীয় জমি থেকে মো. আজগর ও বিউটি দ¤পতিকে উৎখাতের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে হযরত আলী খলিফা গংদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত হযরত আলী খলিফা উপজেলার নিলকমল ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ডর চরযমুনা গ্রামের মুকবুল আহাম্মেদ খলিফার ছেলে।
শুক্রবার সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী দিনমজুর আজগর ও তার স্ত্রী বিউটি জানান, ২০১৪ সালে আহাম্মদপুর মৌজার মুকবুল আহাম্মেদের জমা থেকে হযরত আলী খলিফার কাছ থেকে আমার মামা রহিম ঢালি ৮০ শতাংশ জমি ৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্য স্টাম্পের মাধ্যমে বায়না চুক্তি করেন। সেই বায়না চুক্তির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংকের চেকে ২ লাখ টাকা দেয়া হয় হযরত আলী খলিফাকে। কিছুদিন পর হযরত আলী খলিফা দেয়া চেকটি হারিয়ে গেছে মর্মে মামা রহিম ঢালিকে জানান। পরর্বতীতে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতে হযরত আলী খলিফাকে আরও নগদ দুই লাখ টাকা দিলে জমি মাফ দিয়ে মামা রহিম ঢালিকে ৩২ শতাংশ জমি বুঝিয়ে দেন। এরপর জমিতে মাটি কেটে বাড়ি নির্মাণ করা হলে বাড়িতে পুকুর ও গাছ গাছালি সৃজন করি। এবং বসতঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছি। হটাৎ হযরত আলী খলিফার ভাই শাহজাহান খলিফা উক্ত জমি তার বলে দাবি করেন। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে তার নামে ৪৪ শতাংশ জমি পাওয়া যায়। সেখান থেকে আবু তাহের নামে এক ব্যক্তিকে ৪৪ শতাংশ জমি শাহজাহান খলিফা ছাবকাবলায় বিক্রি করেন। যার দলিল নং ২৮৬২ তাং ২৯-০৫-১৪। তার বিক্রি দলিলের পরিচিতি হন হযরত আলী খলিফা।
তারা আরও জানান, একই জমায় ৮০ শতাংশ জমি থেকে ৪৪ শতাংশ জমি বিক্রির পর ৩৬ শতাংশ জমি থাকে। কিন্তু সরেজমিনে ৩২ শতাংশ জমি আমি বুঝে পাই। এই ৩২ শতাংশ জমি বায়না চুক্তি অনুযায়ী আমাকে দলিল দিবে বলে তালবাহানা করে আসছে হযরত আলী খলিফা। সম্প্রতি রাসেদ জমাদার নামে এক ব্যক্তি তার জমি বলে আমার বাড়িতে এসে বাড়ি থেকে উৎখাতের চেষ্টা করছে। এবং রীতিমতো হুমকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছি। প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
দিনমজুর আজগর ও বিউটি দম্পতির মামা রহিম ঢালি ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সম্প্রতি হযরত আলী খলিফার ভাড়াটে বাহিনী আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ইউসুফ জামাদারের ছেলে রাসেদ জমাদার উক্ত জমি থেকে উৎখাতের চেষ্টা করছে। এবং হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। তার হুমকি ধামকিতে নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছি। তিনি জানান,উক্ত জমির বিরোধ নিয়ে আহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন মিয়ার কাছে বিচারাধীন রয়েছে। বিচারাধীন থাকা অবস্থায় দুইবার বসাবসির দিনতারিখ ধার্য্য হলেও হযরত আলী খলিফা বিচারে বসেননি। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই।
অভিযুক্ত হযরত আলী খলিফা জানান, ৮০ শতাংশ জমি বায়না চুক্তি অনুযায়ী রাহিম ঢালির কাছ থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ও ইসলামি ব্যাংকের ২ লাখ টাকা একটি চেক নিয়েছি সত্য। আমি তাকে বিক্রিত জমি বুঝ দিয়েছি। আমার স্ত্রী শামসুন্নাহার বিউটির নামে ওই জমায় আরও ২০ শতাংশ জমি রয়েছে। সেই জমি রাসেদ জমাদারের কাছে আমার স্ত্রী বিক্রি করেছেন। তাই রাসেদ জমাদার সেই জমি উদ্ধার চেষ্টা করছে।
অভিযোগের বিষয়ে রাসেদ জমাদার জানান, আমি হযরত আলী খলিফার স্ত্রীর শামসুন্নাহার বিউটির কাছ থেকে ২০ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি। সেই জমি উদ্ধারের চেষ্টা করছি। তবে হুমকি ধামকির বিষয়টি সঠিক নয়।
আহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছালাউদ্দিন মিয়া জানান, রহিম ঢালি ও হযরত আলী খলিফার সাথে দীর্ঘদিন জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। সেই বিরোধটি নিয়ে আমার কাছে বিচারাধীন রয়েছে।
দুলারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফ ইফতেখার বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।