চরফ্যাশন প্রতিনিধি:
চিকিৎসা ব্যবস্থায় সংস্কারের দাবিতে চরফ্যাশন উপজেলা সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকে একের পর এক ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি নারীদের মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসা ব্যবস্থায় সংস্কার এবং রোগীদের নিরাপদ সুচিকিৎসা নিশ্চিতসহ ১৭ দফা রোগীদের নিরাপদ সুচিকিৎসা নিশ্চিতসহ ১৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন ছাত্র-জনতা। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্র-জনতার ব্যানারে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্তরে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার পরও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
জানাযায়, ছাত্র-জনতা ১৭টি দফা বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মসূচিটি পালন করেন, ডাক্তারদের সকাল আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ডিউটি করতে হবে এবং রোস্টার অনুযায়ী ডিউটি পালন করতে হবে। সরকারি হাসপাতালে ডায়াগনস্টিকের দালাল ফার্মেসির দালাল ডাক্তারের ব্যক্তিগত দালালসহ সকল ধরনের দালাল মুক্ত করতে হবে। সরকারি হাসপাতালের ১ কি.মি. এর ভিতরে কোনো ডায়াগনস্টিক থাকতে পারবে না।
ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট সময় ব্যতিত হাসপাতালে ডাক্তারদের সাথে দেখা করতে পারবে না, এবং রোগীর প্রেসক্রিপশন এর ছবি তুলতে পারবে না। হাসপাতালে এক্সরে আল্ট্রাস্নোগ্রাম ও প্যাথলজিক্যাল টেস্ট ২৪ ঘন্টা করতে হবে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের অন্য উপজেলায় পরিবর্তন করতে হবে। গত সপ্তাহেও এ ১৭ দফার কোনোটিই বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী ও স্বজন জানান। রোগীরা বলেন, চরফ্যাশন উপজেলায় ব্যাঙেরছাতার মতো প্রায় দুই ডজন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে।
এর মধ্যে অন্তত ১৫ টি হাসপাতাল ডায়াগনস্টিকের নেই কোনো অনুমোদন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ফজলুর রহমান বলেন, অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের কারণেই তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়না। শিক্ষক শফিউল্লাহ বলেন, সরকারি হাসপাতালে সুচিকিৎসা সেবা দেয়া হলে সাধারণ রোগীরা ডায়াগনস্টিক বা বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার জন্য যাবে না। সরকারি হাসপাতালের যারা চাকরি করেন তারা নির্দিষ্ট সময় হাসপাতালে ডিউটি করেন না। পাশাপাশি কোনো রোগী চিকিৎসা নিতে গেলেই তাদেরকে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট বা
পরিক্ষার কাগজ হাতে ধরিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। এসব কর্মকান্ড বন্ধ করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। রোগীর স্বজন শাহেলা বেগম বলেন, বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গর্ভবর্তী নারীরা গেলেই তাদের পেট কাটা (সিজার) ছাড়া সন্তান প্রসব করানো যাবেনা বলে ওইসব ক্লিনিকে চাকুরী করা কতিথ গাইনি চিকিৎসকের তালবাহানায় আমাদের নারীদের জীবন অনিরাপদ হয়ে গিয়েছে।
গত সপ্তাহে চরফ্যাশনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে একজন প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর পরে ছাত্র জনতার চিকিৎসা সংস্কারে ১৭ দফা দাবি তোলা হয়।
এসময় চিকিৎসক আখি আকতার পালিয়ে যান বলেও খবর পাওয়া যায়। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শোভন কুমার বসাক জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যারা নিয়ম বহির্ভূত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যারা নিয়ম বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হবে।