স্টাফ রিপোর্টারঃ
ভোলায় ট্রাক চাঁপায় আবির হোসেন (১০) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের চর ছিফলী এলাকার ২নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনতা ঘাতক ট্রাক টিকে আটক করেছে। এদিকে ট্রাকের ড্রাইভার পালিয়ে গেলেও সাথে থাকা হেলপার কে আটক করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে স্থানীয় জনগণ।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস স্ট্যান্ড থেকে বিশ্ব রোড হয়ে ঢাকা মেট্রো-ট-১৬৮৮৫৪ নামের একটি গাছ বোঝাই করা ট্রাক খেয়া ঘাটের দিকে যাচ্ছিল। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চর সামাইয়া ইউনিয়নের চর ছিফলী গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের ভাই ভাই বেকারি সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছলে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো থাকা মাইক্রো কে সাইড করে ওভারটেক করার সময় রাস্তার ডান পাশে সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মো: আবির হোসেন (১০) কে চাঁপা দেয়। এ সময় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ভোলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর আবিরের অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে। ভোলা হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট হয়ে বরিশাল নেয়ার পথে লাহারহাট ঘাট এলাকায় পৌছলে রাত ৮টার দিকে সেখানে মারা যায়। লাহারহাট থেকে পুনরায় ভোলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয় মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য। হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবিরকে মৃত ঘোষণা করেন। আবির ওই এলাকার মোঃ শাহিন হোসেন এর পুত্র। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো।
এদিকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আবিরকে যে ট্রাকটি চাঁপা দিয়েছে স্থানীয় উত্তেজিত জনতা ওই ট্র্যাকটিকে আটক করে। যদিও ট্রাক ড্রাইভার পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে কিন্তু সাথে টাকা হেলপারকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনগণ। অন্যদিকে শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় হাজী ইয়াকুব আলী তাহশিলদার বাড়ির দরজায় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজার শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ করা হয়নি।
আবিরের বাবা মোঃ শাহিন হোসেন জানান, আল্লাহর দেয়া মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে, এজন্য আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। তবে যে ঘাতক ট্রাক আমার সন্তানকে চাঁপা দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে সেই ট্রাকের মালিকপক্ষ এসে আমাদের পরিবারকে সান্তনা দিবে এটাই কামনা করছি। তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই। কারণ আমার সন্তান তো চলে গেছে, তাই আর কারো বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নেই।
এ বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মিজানুর রহমান পাটোয়ারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া যে হেলপারকে স্থানীয় জনতা আটক করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে সে পুলিশের কাছেই আছে। তার লোকজনদেরকে আসতে বলা হয়েছে, আসলে আইনগত প্রকিয়ার মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।