তজুমদ্দিন প্রতিনিধি:
জলবায়ু বিপদাপন্ন ও ক্ষতিগ্রস্থ উপকূলীয় জেলেদের টেকসই আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন উপকূলীয় ক্ষুদ্র জেলে সম্প্রদায় ও স্থানীয় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় ক্ষতিগ্রস্থ এই জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় ও তাদের জীবনমান উন্নয়নে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি, ক্ষুদ্র জেলেদের অভিযোগ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তাদের জীবিকার ধরণ বদলে যাচ্ছে, ঘন ঘন দুর্যোগের কারনে এখন আর বেশি সময় মাছ ধরতে পারছে না, দুর্যোগ সম্পর্কিত পর্যাপ্ত ও বাস্তবসম্মত জ্ঞান, দক্ষতা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি না থাকায় প্রায় তারা সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ঝুঁকিতে পড়ছে, মহাজন নিয়ন্ত্রিত স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য হওয়ায় লাভজনক মূল্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) কোস্ট ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ভোলার তজুমদ্দিনে উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত “জলবায়ু বিপদাপন্ন উপকূলীয় জেলে সম্প্রদায় সরকারি সুরক্ষা সেবায় প্রবেশাধিকার ও চ্যালেঞ্জ” শীর্ষক সেমিনারে বক্তরা এই সব কথা তুলে ধরেন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের এম.এ. হাসানের সঞ্চালনায় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শুভ দেবনাথ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, মেরিন ফিশারজি অফিসার আল আমিন, ক্ষুদ্র জেলে সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, ট্রলার মালিক সংগঠন, ক্ষুদ্র জেলে সংগঠন, সাংবাদিক প্রতিনিধি সহ অন্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে দরিদ্র-পীড়িত ও জলবায়ু ঝুকিপূর্ণ এই জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় সরকারের কাছে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন তারমধ্যে-চলমান প্রেক্ষাপটে অবরোধকালীন সময়ে জেলে পরিবারগুলোকে যে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই সামান্য এ দিয়ে পরিবারের দিন চলেনা, তাই মাছধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে ক্ষতিপূরণ হিসেবে মাসিক ভাতা হিসেবে নুন্যতম প্রতি জেলে পরিবারের জন্য ৮০০০ টাকা বরাদ্দ করা, বর্তমান তালিকায় বিদ্যমান ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো সংশোধন করা, জেলেদের সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ, বীমায় জরুরী ভিত্তিতে অন্তর্ভূক্ত করা, সকল প্রকার মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনা এবং নিয়মানুয়ী প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী নিশ্চিত করা, ভূমিহীন জেলে পরিবারগুলোকে সরকারি খাস জমিতে পুর্নবাসিত করা ও আদর্শ জেলে পল্লী তৈরি করার মাধ্যমে মৌলিক সেবা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব শুভ দেবনাথ বলেন, ক্রটিপূর্ন জেলেদের তালিকা সংশোধন করা, ঝুকিপূর্ন ও্ ফিটনেসবিহীন ট্রলারগুলোর তালিকা তৈরি করা এবং সকল মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় অতি দ্রুত আনা হবে, কোন নিবন্ধিত জেলে সরকারি সহায়তা না পেলে সাথে সাথে প্রশাসনকে অবহিত করার আহবান জানান তিনি, এছারাও ব্যাংক সুবিধা ও আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন জেলেদের বরাদ্দের বিষয়ে সুপারিশকারে ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে সুপারিশ আকারে চিঠি প্রেরণ করা হবে বলে উল্ল্যেখ করেন তিনি।