চরফ্যাশন প্রতিনিধি:
চরফ্যাশন উপজেলার চরনিউটন গ্রাম থেকে মফিজাবাদ এফ.এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি উদাও এর ঘটনা নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি পূর্বের স্থানে স্থাপন করার দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা চরমাদ্রাজ চরনিউটন গ্রামের বিদ্যালয় মাঠে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মাদ্রাজ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফখন উদ্দিন শাহিন মালতিয়া, বিদ্যালয় জমিদাতা আমিনুল ইসলাম মালতিয়াসহ কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় অভিভাকেরা মানবন্ধনে অংশ গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি চরনিউট গ্রামে কার্যক্রম চালু করার জোড় দাবী জানান। ওই সময় তাদের শ্লোগান ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে নয় ছয় চলবে না চলবে না। পূর্বের জায়গা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলতে হবে, চলতে হবে।
স্থানীয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা বলেন, প্রধান শিক্ষক সোলাইমান স্যারের খাম খেয়ালিপনা ও কারসাজিতে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রভাবখাটিয়ে মফিজাবাদ এফ.এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয় চরফ্যাশণ পৌরসভা নিয়ে কার্যক্রম চালু করেছে। আমাদেরকে প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার দুরে গিয়ে ক্লাস করার জন্য বলা হয়। আমরা কিছুদিন স্কুলে গেলেও এতোদুরে গিয়ে লেখাপড়া করা অসম্বব হয়ে পড়ে। শুধু আমি নয় আমাদের মত অনেক মেয়েরা লেখাপড়া ছেড়ে দিয়েছে।
রুবেল আশরাফ বলেন, আমি ৮ শ্রেণীতে পড়ার পর আমাদের বিদ্যালয়টি পৌরসভা নিয়ে গেছে। আমার আর লেখাপড়া হয়নি। আমি এখন নদীতে ইলিশ মাছ ধরি।
মাদ্রাজ যুবদল নেতা ফুয়াদ মালতিয়া বলেন, আমাদের গ্রামের নামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমাদের গ্রামে পূণরায় চালু করতে এলাকাবাসী দাবী করছেন।
স্থানীয় রিপন সরদার, সোলাইমান, ডাক্তার জাকির ও মামুন বলেন, আমাদের এলাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পূর্বের স্থানে ফিরিয়ে দিতে হবে নচেৎ আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।
চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাবেক নির্বাহী সদস্য, মাদ্রাজ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বর্তমান মাদ্রাজ বিএনির সাধারণ সম্পাদক জননেতা ফখর উদ্দিন শাহিন মালতিয়া বলেন, আজ স্থানীয় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদেরকে নিয়ে বিক্ষোভ মানববন্ধন করা হয়েছে। এই গ্রামে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চরফ্যাশনের কৃতিসন্তান কেন্দ্রীয় যুবদল সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সাথে পরামর্শ করে প্রতিষ্ঠান এই গ্রামে আনতে দুর্নীতি বাজদের বিরুদ্ধে যা যা করা দরকার সবই করা হবে।
বিদ্যালয় জমিদাতা আমিনুল ইসলাম বাচ্চু মালতিয়া বলেন, আমিসহ ৪জন অভিভাবক মফিজাবাদ এফ.এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জন্য ৮৪ শতাংশ জমি ১৯৮৫সালে দলিল দিয়েছি। ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিনে এই বিদ্যালয়টি চর নিউটন গ্রামে নির্মাণ করা হয়। নদীভাঙ্গনে পরে ওই গ্রামের হাজীরহাট বাজার ৫২নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্যক্তি অর্থায়নে টিনের চাউনির ঘর নির্মাণ ক্লাস পরিচালনা করা হয়। বছর খানেক পূর্বে নতুন ভবন বরাদ্দ হলে স্কুল প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগ নেতা সোলাইমান ভূইয়া তার সুবির্ধাথে পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডে ভবন নির্মাণ করে সেখানে স্কুলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে চরের অসহায় পরিবারের সন্তানেরা প্রাথমিক গন্ডি শেষে আর উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে পারছে না। আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে প্রধান শিক্ষক চরের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করছে। তাদের দাবী মফিজাবাদ গ্রামের নামে মফিজাবাদ এফ.এইচ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মফিজাবাদ গ্রামে চালু করতে হবে। নচেৎ কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন করা হবে। ইতিমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানের বরাবর পূর্বের জায়গা চর নিউটন গ্রামে বিদ্যালয় কার্যক্রম চালু করা জন্য দরখাস্তা প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।