স্টাফ রিপোর্টার:
ভোলার ৭২৩২৫ টি পরিবারের মধ্যে তিন উপজেলায় ২৬৯৬০টি দরিদ্র পরিবারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ কেজি করে চাল পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সাবেক ডিলারদের মধ্যে অধিকাংশই পলাতক রয়েছেন। এই মুহুর্তে যে নতুন আবেদন গুলি পড়েছে সেগুলি সঠিক যাচাই বাছাই, রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও স্থানীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে এমন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
বিগত সরকারের নিয়োগ দেওয়া ১৮৭ জন ডিলারের মধ্যে সাময়িকভাবে তিন মাসের জন্য ভোলা সদর উপজেলার ৩৪ জন ডিলারের মধ্যে ১১ জন ছাড়া বাকী ২৩ জন নতুন নিয়েগ দিতে হবে।মনপুরা উপজেলায় পুরানো ৮ জনের স্থলে নতুন ৮ জন এবং লালমোহন উপজেলায় ৪৫ জন ডিলারের মধ্যে পুরাতন ১৯ জন বাদে নতুন ২৬ জন ডিলারই নিয়োগ দিতে হবে। এছাড়া তজুমদ্দিন উপজেলায় ১৪ জন ডিলারের ৩ জন নতুন বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২১ জনের ৬ জন নতুন ও চরফ্যাশন উপজেলার ৫০ জন ডিলারের সবাই নতুন নিয়োগ।মোট ৯৩ জন ডিলার তিন মাসের জন্য সাময়িক নিয়োগের অপেক্ষায়।দৌলতখান উপজেলায় ১৫ জন ডিলারের মধ্যে ১৫ জনই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ভোলা সদরে ৩৪ জন ডিলারের মধ্যে ১১ জন ডিলার খাদ্য গুদাম থেকে চাল উত্তোলন করে ৫০৮৩ টি পরিবারের মধ্যে এ মাসের বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। ২১ হাজার ৮৭৭টি দরিদ্র পরিবার এ চাল কেনার সুযোগ পওয়ার কথা রয়েছে।
কিন্তু জেলায় নতুন করে ৯৩ জন ডিলার নিয়োগ না দেওয়ায় ভোলা সদর উপজেলার সুবিধাভোগী বার হাজার তিনশত সতেরটি পরিবার, মনপুরা উপজেলার সুবিধাভোগী তিন হাজার দুইশত সাতচল্লিশ টি পরিবার,লালমোহন উপজেলার সুবিধাভোগী এগার হাজার তিন শত সাতাশি টি পরিবার মোট ২৬৯৬০টি দরিদ্র পরিবারের সেপ্টেম্বর মাসের চাল বিতরণে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। খাদ্য বিভাগ নতুন ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আবেদনও জমা পড়েছে। কিন্তু খাদ্য বান্ধব কমিটির সিদ্ধান্ত কবে বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে নিশ্চিত কিছু জানা যায়নি। ফলে এ দরিদ্র পরিবারগুলো ১৫ টাকা কেজি দরের চাল পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
এসব দরিদ্র পরিবারের এখন চালের সংকট চলছে। কারণ শ্রমজীবী দরিদ্র এপরিবারে আশ্বিনের টানাপোড়েন চলছে। কর্মসংস্থানের অভাব রয়েছে, দরিদ্র, অস্বচ্ছল জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে কৃষক শ্রেণির মানুষের কথা চিন্তা করে কম দামে চাল বিক্রির এ কার্যক্রম চালু করে সরকার। বর্তমানে সরকার পরিবর্তনের কারণে এখানকার ৯৪ জন ডিলার পদত্যাগ/পলাতক থাকায় এ মাসের চাল বিতরণে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
ভোলা সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো.আবদুল মালেক তালুকদার জানান, ২৩ জন ডিলার নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এজন্য ১০৭টি আবেদন জমা পড়েছে। খাদ্যবান্ধব কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করা হবে। তবে এ মাসে বার হাজার তিনশত সতেরটি পরিবারকে চাল বিতরনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি এ কর্মকর্তা।
ভোলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জনাব এহসানুল হক জানান খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তিন মাসের জন্য সাময়িক ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।কিছু কিছু এলাকায় ১৫টাকা কেজি দরের চাল বিতরন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও এক পৌরসভার দরিদ্র কৃষক শ্রমজীবী ১৭ হাজার ৪০০টি পরিবার মাসে ৩০ কেজি করে ১৫টাকা কেজি দরের চাল কিনে খাওয়ার সুযোগ পেয়ে আসছে। বছরে পাঁচ মাস এ খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন তারা। মার্চ-এপ্রিল এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর- এই তিন মাস এই খাদ্য সহায়তা পেয়ে আসছেন।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু করা হয়। এজন্য সুবিধাভোগীদের তালিকা করে কার্ড প্রদান করা হয়েছে। তারা কার্ড দেখিয়ে ১৫ টাকা কেজি করে ডিলারদের কাছ থেকে চাল কেনার সুযোগ পেয়ে আসছেন।