চরফ্যাশন প্রতিনিধি:
গোলাম রকিব রাজিব। পুঁথিগতবিদ্যা শেষ করেই হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বিভাগের চাকরিতে যোগদান করেন। উদ্দেশ্য অসহায়-অবহেলিতসহ সব শ্রেণির অসুস্থ্য মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে সহায়তা করা। ছাত্রজীবনে তুখোড় মেধাবী হওয়ায় উচ্চাবিলাসী বেতনের চাকরি হাতছানি দিলেও তিনি সেদিকে হাত বাড়াননি। মানবসেবার মহান ব্রত নিয়ে নেমে পড়েন চিকিৎসা ডিপার্টমেন্টে। এরপরই নানাভাবে সহযোগিতা করতে থাকেন মানুষজনকে। বিশেষ করে বিভাগ ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বিষয়ে পরামর্শ প্রদান, হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর বিলে সর্বোচ্চ ডিসকাউন্ট, রোগীর প্যাথলজিক্যাল টেস্ট রিপোর্টের বিলে, ডাক্তারের বিল কমিয়ে রোগীদের সার্বিক সহায়তাই করছে দীর্ঘ বাইশ বছর যাবত। এ পর্যন্ত কতজন রোগীকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন তার কোন সঠিক হিসেব নেই তাঁর নিজের কাছেও। এখনো প্রতিদিন গড়ে ২৫/৩০ জন রোগী তজুমদ্দিনসহ ভোলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ ইবনে সিনা হাসপাতালের বিভিন্ন শাখায় চিকিৎসা নেন তার মাধ্যমে। আর তিনি তাদেরকে মন উজার করে সেবা দিচ্ছেন। নানা ধরনের সেবার কাজ করছেন গোলাম রকিব। শুধু তার জন্মস্থান তজুমদ্দিনের মানুষের জন্যই না। পুরো ভোলা জেলার মানুষের চিকিৎসাসেবায় তিনি নিবেদিত প্রাণ।
ভোলা সদর, লালমোহন, তজুমদ্দিন, চরফ্যাশন, মনপুরা, তজুমদ্দিন, বোরহানউদ্দিন, দৌলতখানসহ শশিভূষণ, দক্ষিণ আইচা, ও দুলারহাটের মানুষকে তিনি চিকিৎসাসেবায় নানাভাবে সহায়তা করছেন। এ সেবার ক্ষেত্রে তিনি কখনো রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা নিয়ে সেবা দেননি। প্রত্যেককে তিনি আপন ভাইয়ের মত খোঁজ-খবর নিয়ে সহযোগিতা করছেন। কঠিন রাজনৈতিক বিভাজনের প্রতিহিংসা পরায়ন না হয়ে প্রত্যেকে তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সেবা দিয়েছেন।
গোলাম রকিব রাজিব শুধু মানুষকে স্বাস্থ্যসেবায় সহায়তাই করেননি। তিনি একজন সমাজসেবকও বটে। নিজ এলাকা তজুমদ্দিন থানায় কয়েকটি মসজিদ মোক্তব প্রতিষ্ঠাসহ তার জন্মভূমি তজুমদ্দিনের অসহায় মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্যে সহযোগিতা করেন।
চরফ্যাশনের এক রোগীর আত্মীয় বলেন, গোলাম রকিব রাজিব স্যার খুব ভাল মানুষ। তিনি ভোলা জেলার যেকোন মানুষকে তিনি সহযোগিতা দিয়ে থাকেন। তাকে শুধু জানানো হলেই হলো। যে স্যার আমি ডাক্তার দেখাব। রোগের কথা বলার সাথে সাথে তিনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারসহ যাবতীয় বিষয়ে সহায়তার ব্যবস্থা করে রাখেন। দূর-দূরান্তের রোগী হিসেবে ব্যয়বহুল ঢাকায় অবস্থান না করে কীভাবে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফেরা যায় সে ব্যবস্থার চেষ্টা করেন সব সময়।
তজুমদ্দিননের মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, স্যার অত্যন্ত মহৎ হৃদয়ের মানুষ। তিনি আমাদের তজুমদ্দিনের মানুষকে চিকিৎসা বিষয়ে শুধু সহযোগিতা করেন না। তিনি তজুমদ্দিনসহ ভোলার মানুষকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন। তিনি একজন বিশিষ্ট সমাজসেবক। তজুমদ্দিনে মসজিদ মক্তব প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ করছেন। তিনি অনেক অসহায় মানুষকে বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা করেছেন। আমরা মহান আল্লাহর কাছে তার উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করি।
গত ২২ বছর আগে ইবনে সিনা ট্রাস্টের ইবনে সিনা ধানম-ি শাখায় রিসিভশনিস্ট হিসেবে যোগদান করেন গোলাম রকিব। এরপর গত ২২ বছরে তার কাজের দক্ষতা যোগ্যতা সততা আন্তরিকতার কারণে পাঁচটি স্তর পদোন্নতি পেয়ে ডেপুটি এডমিন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঠিক যে মুহূর্তে ম্যানেজার হবেন তখন থেকে অর্থাৎ গত বছর শেষের দিক থেকে ইবনে সিনাতে কর্মরত নেই। আশা করা যায় তিনি অচিরেই আগের চেয়ে আরো গুরুত্বপূর্ণ পদে আবার যোগদান করবেন।
গোলাম রকিব রাজিব বলেন, আমি মানুষের ভালবাসা ও আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। এখান থেকে অনেক উচুমানের চাকরি পেয়েও করিনি। মানবসেবার মহান ব্রতের কারণে হাসপাতাল সেক্টরে থেকে গেলাম। যতদিন বেঁচে থাকি মানুষের সেবা করে যাব। তিনি আরো বলেন, আপনারা দোয়া করবেন ভবিষ্যতে যেন মানুষকে আরো বেশি সেবা দিতে পারি।