স্টাফ রিপোর্টার:
ভোলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরা উপকূলের ৯ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। গত ৫ মাসে আগে ঘূর্ণীঝড় রেমালের আঘাতে বিধ্বস্ত হয় ওই বেড়ীবাঁধ। কিন্তু আজও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ীবাঁধ সম্পূর্ণরুপে সংস্কার করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এর মধ্যে উপজেলা শহর রক্ষা বাঁধটি পুরোপুরি অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অদক্ষতা ও গাফিলতিকে দায়ী করে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যে কোন সময় বিধ্বস্ত শহর রক্ষা বাঁধ ও ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে ভেসে যেতে পারে পুরো উপজেলা। এতে আসন্ন ঘূর্ণীঝড় ‘ডানা’কে কেন্দ্র করে আতংকিত হয়ে পড়েছে পুরো উপকূলের দেড় লাখ বাসিন্দারা।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, পূর্বের ঘূর্ণীঝড় থেকে শক্তিশালী হতে পারে “ডানা” এমন আশংকা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এতিমধ্যে এটি লঘুচাপ থেকে নিন্মচাপে পরিণত হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১নম্বর দূরবর্তী সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়াবিদ। ঘূর্ণীঝড়টি বুধবার ও বৃহস্পতিবার আরও ভয়ংকর রুপ ধারন করে উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এতে আরও বেশি আতংকিত হয়ে পড়েছে মনপুরা উপকূলের বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ ও শহর রক্ষা বাঁধ মেরামত না করায় ঘূর্ণীঝড় “ডানা”র প্রবাহে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেয়ে পুরো উপজেলা প্লাবিত হতে পারে। এতে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাবে উপজেলা পরিষদ, হাসপাতাল, স্কুল, কলেজ, থানা ও বিদ্যুৎ অফিসসহ হাট-বাজার। এতে অসংখ্য প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে আশংকা করছেন স্থানীয়রা। তাই দ্রুত বেড়ীবাঁধ সংস্কারসহ শহর রক্ষা বাঁধটি আজ ও কালকের মধ্যে মেরামতের দাবী করছেন স্থানীয়রা।
পাউবো সূত্রে ও সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ৫ মাস আগে ঘূর্ণীঝড় রেমালের আঘাতে উপজেলার হাজীরহাট ইউনিয়নের ১১ টি পয়েন্টে ভেঙ্গেছে ৪ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ। ৩ নং উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের ৩ টি পয়েন্টে ১ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ, ৪ নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নে ৯ পয়েন্টে ৩ কিলোমিটার ও ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের ৩ টি পয়েন্টে ১ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ বিধ্বস্ত হয়। ৫ মাস পেরিয়ে গেলেও আজও সেই সমস্ত বেড়ীবাঁধ সংস্কার করেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এই সমস্ত ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ মেরামতের ছিটেফোঁটা উদ্যোগ গ্রহন করেনি পাউবো।
উপজেলার সদরে শহর রক্ষা বাঁধের আশে পাশে বসবাসরত, সাখাওয়াত, কালাম, অহিদ, রহমান, সামি, রুবেল, শাহজাহান, জসিম, ইলিয়াস সহ অনেকে জানান, শহর রক্ষা বাঁধটি ঘূর্ণীঝড় রেমালের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত পাউবো বাঁধটি মেরামত করেনি। শুনেছি ঘূর্ণীঝড় ডানা আগের ঘূর্ণীঝড় থেকে শক্তিশালী। এতেই পুরো এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এবার ঘূর্ণীঝড়ে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে পুরো উপজেলা তলিয়ে যেতে পারে, এমনকি প্রাণহানির আশংকা করছেন তারা। তাই তারা দ্রুত শহর রক্ষা বাঁধটি মেরামতের দাবী করেন।
এই ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আসফাউদৌলা জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। অনেক বিষয় জানি না। তবে মনপুরার বেড়ীবাঁধ সংস্কারে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। শহর রক্ষা বাঁধটি মেরামত করা হবে।