স্টাফ রিপোর্টার:
২০০৮ সালে ভোলার লালমোহন উপজেলার ক্রীড়াপ্রেমিদের স্বপ্ন দেখিয়ে শুরু হয় ‘বীরবিক্রম হাফিজ উদ্দিন স্টেডিয়ামের’ নির্মাণ কাজ। উপজেলার ক্রীড়াপ্রেমি কিশোর, তরুণ এবং যুবকদের সুষ্ঠু খেলাধুলার লক্ষ্যে ২০০৮ সালের ১ এপ্রিল স্টেডিয়ামটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তবে উদ্বোধনের কিছুদিনের মাথায় অজ্ঞাত কারণে বন্ধ হয়ে যায় স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ। বর্তমানে স্টেডিয়ামটি একটি পরিত্যক্ত মাঠ হিসেবে পড়ে রয়েছে।
লালমোহন পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ভোলা-চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কের লালমোহন পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পেশকার হাওলা এলাকায় প্রায় ৫ একর জমির ওপর ২০০৮ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয় স্টেডিয়ামটির। ২০০৮ সালের ১ এপ্রিল স্টেডিয়ামটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম। তিনি দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অসামান্য অবদান রাখায় এবং এক সময়ের জাতীয় ফুটবল দলের সুনামধন্য খেলোয়াড় হওয়ার সুবাদে তার নামেই নামকরণ করা হয় ‘বীর বিক্রম হাফিজ উদ্দিন স্টেডিয়াম’। তখন এ স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় তলায় ভিআইপি লাউঞ্জ, প্রেস লাউঞ্জ, প্লেয়ার লাউঞ্জসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পরিকল্পনা নির্ধারণ করে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। এছাড়াও মাঠের চারদিকে আধুনিক গ্যালারি নির্মাণ ও বাইরের অংশে মার্কেট নির্মাণেরও পরিকল্পনা ছিল। যার জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তখন ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ। পরে আরো আড়াই লাখ টাকা ও মাঠ ভরাটের জন্য ৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মিত আংশিক ভবন অযত্ন-অবহেলায় এখন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে অযত্নে অবহেলায় পড়ে রয়েছে স্টেডিয়ামটি। বিগত কয়েক বছর যাবত এটিকে লালমোহন পৌরসভা ময়লা ফেলার স্থান হিসেবে নির্ধারণ করে সেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। যার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ ওই এলাকার শত শত মানুষ। আবার কিছুদিন পর স্তুপ করে রাখা সেই ময়লা আগুনে পোড়ানো হলে তার ধোঁয়ায় দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। এছাড়াও স্টেডিয়ামটির ভেতরে বিদ্যুতের খুঁটি রেখে প্রায় অর্ধেকস্থান দখল করে রাখা হয়েছে। স্টেডিয়ামটির মধ্যে কন্সট্রাকশনের কাজে ব্যবহৃত পাথরসহ রাখা হয়েছে অন্যান্য মালামালও।
স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমি কিশোর, তরুণ এবং যুবকরা বলছেন, যখন স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়, তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল লালমোহনের মতো এই গ্রামাঞ্চলে খেলাধুলার একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি হবে। স্টেডিয়ামটি জাতীয় মানের একটি স্টেডিয়াম হিসেবে পরিচিতি পাবে। তবে অজ্ঞাত কারণে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কিছুদিনের মাথায়ই তা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে অযত্নে-অবহেলায় পড়ে আছে স্টেডিয়ামটি। তাই আমাদের দাবি; দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন এই স্টেডিয়ামটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে খেলাধুলার উপযোগী করা হয়।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, স্টেডিয়ামটি নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এই স্টেডিয়ামটি কোন প্রকল্পের আওতায় রয়েছে, তা জেনে খুব শিগগিরই এটি পুনঃনির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া এরইমধ্যে ওই স্টেডিয়ামে ময়লা না ফেলানোর জন্য বলা হয়েছে।