ভোলা প্রতিনিধিঃ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত ছাতা মেরামত কারিগর জসিম উদ্দিনের লাশ ২৯ দিন পর কবর থেকে তোলা হয়েছে। সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) ভোলার ছোট আলগী গ্রামে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে লাশটি তোলা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয়।
লাশ উত্তোলনের সময় নিহত জসিম উদ্দিনের স্ত্রী, শ্বশুর, দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ স্বজন ও এলাকার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। জসিম নিহত হওয়ার পর ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয় বলে অভিযোগ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর ভোলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অসীম কুমার দের আদালতে আবেদন করলে লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দেন বিচারক। আদালতের নির্দেশ পেয়ে সোমবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রহমত উল্যাহর নেতৃত্বে ও পুলিশের উপস্থিতিতে জসিমের লাশ উত্তোলন করা হয়।
গত ৪ আগস্ট কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলাকালে ভোলার নতুন বাজার এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন জসিম। খবর পেয়ে স্বজন ও এলাকাবাসী এবং আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা লাশ উদ্ধার করে জসিমের বাড়িতে নিয়ে যান। ঘটনার পর পুলিশ ময়নাতদন্তের কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্বজন ও এলাকাবাসী জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
ঘটনার পর রাতেই ভোলা সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রুবেল অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন।
জসিম উদ্দিনের পরিবার সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার দিন পুলিশ ভোলা শহরের নতুন বাজারে বেপরোয়াভাবে গুলি করে জসিমকে হত্যা করে। তার হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্য ও অফিসারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
নিহতের স্ত্রী জানান, লাশ ময়নাতদন্ত না করার কারণে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেননি। এখন যেহেতু লাশের ময়নাতদন্ত হবে, সেহেতু এ ঘটনায় জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করবেন।
ভোলা সদর মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার মো. নাজমুল বলেন, জসিম পুলিশের গুলিতে মারা গেছে, নাকি অন্য কোনও কারণে মারা গেছে; তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর জানা যাবে। আপাতত এর চেয়ে বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রহমত উল্যাহ বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা পেয়ে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’